Tuesday, 17 June, 2025
17 June, 2025
Homeদক্ষিণবঙ্গAnubrata Mondal: বাঁশি শুনে আর কাজ নাই! একই কেষ্টর একই বাঁশি, শুধু...

Anubrata Mondal: বাঁশি শুনে আর কাজ নাই! একই কেষ্টর একই বাঁশি, শুধু পর্দা আর ভাষার ফারাক

বাপি আসলে তাঁর ‘টেনিয়া’। ‘স্যাটেলাইট’। সঙ্গে সঙ্গে থাকে।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

চন্দন দাস, কলকাতা:

রবিবার দুপুর-দুপুর অচেনা নম্বর থেকে মোবাইলে ফোন!

এ সব নম্বরের প্রায় ৯৭ শতাংশই জালিয়াতদের হয়। ফলে কোনও অচেনা নম্বর ধরি না। প্রথমে ব্লক করি। তার পরে ট্রু-কলারে ফেলে দেখি। ওই ফোনটাও তেমনই করেছিলাম। দেখলাম, ট্রু-কলার দেখাচ্ছে ‘বাপি-কেষ্টদা’।

এ ধরাধামে গত প্রায় এক দশক ধরে ‘কেষ্ট’ নামের ইজারা একজনেরই আছে। ঘটনাচক্রে, সে দিন আবার বীরভূম জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক ছিল। যে বৈঠকের কিছু দিন আগে দোর্দণ্ডপ্রতাপ কেষ্ট মণ্ডলকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই অপসারণের পরে কোর কমিটির প্রথম বৈঠক ঘোর গুরুত্বপূর্ণ। সে বৈঠক শেষ। ট্রু-কলার যা দেখাচ্ছে, তা সত্য এবং শাশ্বতই হওয়ার কথা। উপরন্তু, রিপোর্টারের ষষ্ঠেন্দ্রিয় বলল, এই কেষ্ট সেই কেষ্টই। ব্লক খুলে কল ব্যাক করলাম। বারদুয়েক রিং হতেই বাপি ধরলেন এবং বললেন, ‘‘কেষ্টদা কথা বলবেন।’’

যা ভেবেছিলাম, তা-ই। ফোন হাতচালান হল। পরিচিত কণ্ঠে অনু-যোগ ভেসে এল। কোর কমিটির বৈঠকের খবর অন্য সমস্ত সংবাদমাধ্যম কী ভাবে করেছে এবং বঙ্গবার্তা কী ভাবে, তার তুল্যমূল্য আলোচনা। সঙ্গে খানিক অনুরোধও। কী অনুরোধ, সে বিস্তারে না-ই বা গেলাম। কিন্তু বক্তব্য খুব অযৌক্তিক বলে মনে হল না।

আরও পড়ুন: মৃত্যুমিছিল উত্তর-পূর্ব ভারতে, জল বাড়ছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রে

দশ মিনিট পরে বাপির নম্বরে ফোন করলাম। রিং হতে না হতেই ফোন তুলে ওপাশ থেকে মিহিগলায় বাপি বললেন, ‘‘হ্যাঁ দাদা, বলুন।’’ বললাম, কেষ্টদা আছেন? একবার কথা বলব। সেই মিহি গলা আরও মিহি হয়ে বলল, ‘‘আমি বলছি তো।’’

আমি বলছি মানে? মানে তিনি বলছেন? মানে কেষ্ট মণ্ডল স্বয়ং? ওই রকম ইঁদুরের মতো গলায়! বলে কী! কোনওমতে বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে বললাম, তিনি যে অনুরোধ করেছিলেন, তা অযৌক্তিক মনে হয়নি। ফলে তা রক্ষাও করা হয়েছে। সেটা জানাতেই তাঁকে ফোন করা। চড়া গরমে গলে-যাওয়া আইসক্রিমের মতো কৃতার্থ এবং নরম তুলতুলে কণ্ঠ বলল, ‘‘সেটা দাদা আপনারা যেটা ভাল মনে করেন।’’ কৌতূহল হচ্ছিল। বললাম, এটা কি আপনার নতুন নম্বর নাকি? কণ্ঠ বলল, ‘‘না-না। এটা ওই বাপিরই নম্বর। তবে আমার নম্বরও বলতে পারেন। আমার কাছে কাছেই থাকে তো।’’

বুঝলাম, বাপি আসলে তাঁর ‘টেনিয়া’। ‘স্যাটেলাইট’। সঙ্গে সঙ্গে থাকে। কেষ্টর আলোয় আলোকিত হয়ে তাঁর ক্ষমতার কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। কেষ্ট মণ্ডলের সঙ্গে আরও খানিক কথাবার্তা চালানোর ইচ্ছে ছিল। কিন্তু ইপ্সিত কাজ হয়ে গিয়েছে। তাঁর ধৈর্যের পরিধি তত ক্ষণে অতিক্রান্ত। ফোনটা সম্ভবত বাপির হাতেই চালান হল। লাইনটা তখনও জ্যান্ত ছিল। শুনলাম ওপাশ থেকে ভেসে এল, ‘‘চ-চ-চ! এবার বেরিয়ে চ!’’ সেই কণ্ঠস্বরে কোথাও কোনও বিনম্রতার লেশ নেই। আছে প্রভাবশালীর নির্ভুল নির্দেশ। পটভূমিতে ফিরে এসেছে পরিচিত ‘চড়াম-চড়াম’।

কেষ্ট মণ্ডলের রাজনৈতিক অভিযাত্রা দেখে নিজেরই মাঝেমধ্যে অবাক লাগে। মাথার কদমছাঁট চুল, ঘন ভ্রু, ঝুঁপো গোঁফ, মোটা ঠোঁট, ঢোলা ফতুয়া-পাজামা, আঙুলে গ্রহরত্ন সমন্বিত আংটির ভিড় আর মাঠো কথা (কথা? না কি ‘ডায়ালগ’? গরম লুচির মতো পাতে পড়লেই হিট)। গ্রাম্য বাহুবলীর আদর্শ উদাহরণ তিনি। কোনও দিন জনপ্রিতিনিধি হননি। সাংসদ, বিধায়ক তো দূরের কথা, পঞ্চায়েতের পদাধিকারীও নন। অথচ বোলপুরের রাজনীতিতে তাঁর কী দাপট! অবশ্য সেই প্রভাব না-থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কি আর তাঁকে শুধু শুধু এত নম্বর দিতেন?

গরুপাচার মামলায় ২০২২ সালের অগস্টে সেই কেষ্টই বোলপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয়ে গেলেন সিবিআইয়ের হাতে। তার পর থেকে জেলে বন্দিজীবন তাঁর। প্রথমে আসানসোল। তার পর দিল্লির তিহাড়। সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর আসানসোল জেলের মধ্যে ইডি-ও তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। তার পর ইডি-র হেফাজতে রেখেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। সেটা ২০২৩ সালের মার্চ মাস। দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরে কয়েক দিন রেখে তাঁকে জেরা করা হয়। ৮ মার্চ থেকে তিহাড় জেলে বন্দি ছিলেন কেষ্ট। ২০২৩ সালেরই এপ্রিলে ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডল। দিল্লিতে ডেকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

গরুপাচার মামলার তদন্তে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা চার্জশিটে ইডি জানিয়েছিল, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে থাকা অর্থ এবং নামে-বেনামে সম্পত্তি মিলিয়ে কেষ্টর ৪৮ কোটি টাকার বেশি সম্পদের হদিস মিলেছে। ইডি-র বক্তব্য অনুযায়ী যার পুরোটাই গরুপাচারের ঘুষের টাকায় তৈরি। রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে এনামুল হকের গরুপাচার মসৃণ ভাবে চালানোর ব্যবস্থা করে দিতেন কেষ্ট। তার বিনিময়ে কোটি-কোটি টাকা (কেষ্টর কাছের লোকেরা হয়তো বলবেন ‘সার্ভিস চার্জ’) জমা পড়ত তাঁর সিন্দুকে। বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়ির পরিচারক বিদ্যুৎবরণ গায়েনের নামে ছিল ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। অথচ তার ‘নমিনি’ ছিলেন কেষ্টর মেয়ে সুকন্যা! মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতন পেতেন বিদ্যুৎ। কিন্তু সেই ১৫ হাজার টাকা বেতনের কর্মীর নামে কেনা হয়েছিল ৭ কোটি ৭১ লক্ষ টাকার জমি। ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল আনাজবিক্রেতা এবং ধোপা বিজয় রজকের নামে। মাঝেমধ্যেই যাঁর ডাক পড়ত কেষ্টর গা-হাত-পা মালিশের জন্য।

আরও পড়ুন: বৃষ্টিস্নাত কলকাতায় পা শাহের! রবিবার একগুচ্ছ কর্মসূচি

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সিউড়িতে সভা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতার। কেষ্ট তখন জেলে। সেই সভায় মমতা বলেছিলেন, বীরভূমে চক্রান্ত চলছে! প্রকাশ্য সভা থেকে বলেছিলেন, ‘‘কেষ্টকে কত দিন ধরে জেলে ভরে রেখেছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করতে পারেনি। আসতে আসতে দেখছিলাম, তরুণ প্রজন্ম ওর কথা বলছে। আমি তো কাউকে শিখিয়ে দিইনি। কিন্তু আমি মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখছিলাম। ও কাজ করেছে, ও কাজ করতে জানে।’’

পোড়খাওয়া রাজনীতিক মমতা জানতেন, দল চালাতে গেলে হার্ভার্ডের অধ্যাপক সুগত বসুকে যেমন দরকার, তেমনই প্রয়োজন কেষ্ট মণ্ডলদেরও। সুগতেরা হবেন ‘নাগরিক মুখ’। কেষ্টরা গ্রামেগঞ্জে সংগঠন সজুত করবেন। সুগতেরা যাবেন সংসদে গণতান্ত্রিক বিতর্কে অংশ নিতে। আর কেষ্টরা নরমে-গরমে, ধমকে-চমকে, টানে-ঢিলে ভোট করাবেন। কোথাও নকুলদানা দেবেন। কোথাও গুড়-বাতাসা। দিদি যা বলবেন, অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন।

কিন্তু কালের পাশায় উল্টো দান পড়ে গেল। বীরভূম জেলায় কেষ্টর অনুপস্থিতিতে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে অবতীর্ণ হল তৃণমূল। দু’টি আসনই হইহই করে জিতল তারা। সম্ভবত তখন থেকেই কেষ্টর মাথার কলপহীন চুল এবং গোঁফের মতো তাঁর রাজনৈতিক দাপটের রংও ফিকে হতে শুরু করেছিল। স্বাভাবিক। জীবনের মতো রাজনীতিতেও কখনও কোনও শূন্যতা থাকে না। কারও ফেলে যাওয়া জায়গা ফাঁকা থাকে না। সামান্য সুযোগ পেলেই বিকল্প ক্ষমতা লকলক করে মাথা তুলে দাঁড়ায়। বীরভূম ব্যতিক্রম হতে যাবে কোন দুঃখে? কেষ্টর স্থানও শূন্য থাকেনি। যাঁরা ছুঁচ হয়ে ঢুকেছিলেন, কেষ্টর অনুপস্থিতিতে তাঁরাই ফাল হয়ে উঠলেন।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তিহাড় থেকে ছাড়া পেলেন কেষ্ট। তাঁকে জামিন দিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। কিন্তু আইনি কাগজপত্র সময়ে জমা না-পড়ায় তাঁর সত্বর জেলমুক্তি সম্ভব হয়নি। পরে নথিপত্র ঠিকঠাক জমা পড়ায় জামিন পান। বাবাকে জেল থেকে আনতে গিয়েছিলেন সুকন্যা। সেপ্টেম্বরের শেষে মেয়েকে নিয়ে বোলপুরের নিচুপট্টির বাড়িতে ফেরেন অনুব্রত। কলকাতা বিমানবন্দর থেকেই তাঁদের সঙ্গী হয়েছিল পুলিশ। হাজার হোক, রাজ্য সরকারের তরফে নিরাপত্তা পান কেষ্ট। বাড়ি ফিরে জানিয়েছিলেন, তাঁর পা এবং কোমরে ‘বেদনা’ আছে। পরের দিনই পুলিশকর্মীর কাঁধে ভর দিয়ে তৃণমূল কার্যালয়ে ঢুকেছিলেন কেষ্ট (পুলিশের সঙ্গে কেষ্টর সম্পর্কের ইতিহাস প্রাচীন। কখনও তিনি অন্যদের নিদান দেন পুলিশকে ‘বম্‌’ মারতে। কখনও কব্জির বাঘা ঘড়ি দেখিয়ে পুলিশকে সময়সীমা বেঁধে দেন। কখনও পুলিশের সঙ্গে গল্পগাছা করেন)। তার পরদিন গ্রামের বাড়িতে গিয়ে অবশ্য তাঁকে আরও কারও কাঁধে ভর দিতে হয়নি। সম্ভবত তিনি বুঝেছিলেন, আবার নিজের পায়ে, নিজের দাপটে, নিজের চোটেপাটে দাঁড়াতে হবে তাঁকে।

কিন্তু জীবন এবং সম্পর্কের মতো রাজনীতিতেও তার একবার কেটে গেলে তা জোড়া কঠিন। যে কেষ্ট জেল থেকে ফিরে এসে তাঁর রাজ্যপাট (কারণ, জেলে গেলেও তাঁকে বীরভূমের জেলা সভাপতি পদ থেকে সরাননি দলনেত্রী মমতা) হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলেন, তিনি দেখলেন, রামের সিংহাসনে ভরতের পাদুকাজোড়া সেই যে বসেছিল, তা আর নামার নাম করছে না। উল্টে তাঁরই পদাবনতি হয়ে গেল। বীরভূমের জেলা সভাপতির পদ ছেঁটে ফেলে তাঁকে করে দেওয়া হল দল পরিচালনায় গঠিত কোর কমিটির সদস্যমাত্র। যে সদস্য এক রবি-দুপুরে চায়ে ভেজানো থিন অ্যারারুট বিস্কুটের মতো মিয়োনো গলায় ফোনে কথা বলেছিলেন।

কিন্তু ওই যে বললাম, নম্রতাটা নিছক নির্মোক। দীর্ঘলালিত ‘চড়াম-চড়াম’ গুমোর অত সহজে চলে যায় না। কেউ যেতে দিতেও চায় না। ক্ষমতা এক আশ্চর্য বস্তু। নিষিদ্ধ বলবর্ধক পাঁচনের মতো। নিষিদ্ধ। কিন্তু বলবর্ধক। সেই অনুপান যে এক বার খেয়েছে, তার সব বেভুল হয়ে যায়। আগুপিছু, গুরু-লঘু জ্ঞান লোপ পায়। ক্ষমতার লেজ য়খন কেউ মাটিতে আছড়ানো শুরু করে, তখন সে ভুলে যায়, সে লেজ কাটাও পড়তে পারে।

বোলপুরের পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে তাঁর কথোপকথনের অডিয়ো শুনতে শুনতে কান-মাথা ঝাঁ-ঝাঁ করছিল। গা ঘিনঘিন করছিল। দু’-চারটে অসংসদীয় শব্দ যে জানি না, তা নয়। বন্ধুবৃত্তে বা লঘু আড্ডায় ব্যবহার করি না, তেমনও নয়। গঙ্গাজলে কুলকুচি করে তো আর দিন শুরু করেন না কেউ। ফলে প্রায় সকলেই কখনও সখনও ঘনিষ্ঠদের সামনে কাছাখোলা হয়ে থাকেন। একটু প্রগল্‌ভ হন। একটু আদিরসাত্মক। একটু বাচাল। কিন্তু কেষ্ট মণ্ডল সে সবের সীমা অতিক্রম করে গিয়েছেন। অভ্যস্ত অবলীলায় অশ্লীল শব্দের এমন অনায়াস ব্যবহার তো বটেই, এক পুলিশ অফিসারের মা এবং স্ত্রীকে জড়িয়ে যে সমস্ত বাক্য তিনি বলেছেন, তা লেখার সাহস জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সিরিজ়ের ডাকাবুকো চিত্রনাট্যকারেরাও দেখাতে পারবেন কি না সন্দেহ! বৃষ্টির ছাটের মতো কেষ্টর মুখনিঃসৃত অশ্রাব্য শব্দ এবং বাক্য ছাপার অযোগ্য (শোনাতে গেলে ‘বিপ’ শব্দও লজ্জায় মুখ লুকোবে) তো বটেই, অসুস্থ করে দেওয়ার পক্ষেও যথেষ্ট।

‘ওষুধ’ সংক্রান্ত কেষ্টর স্খলিত কণ্ঠ, প্রতাপশালীর রোয়াব এবং তজ্জনিত চোটপাট যে তলানিতে গোটা বিষয়টাকে নিয়ে ফেলেছে, তার নজির সাম্প্রতিক কালে নেই। একজন দায়িত্বশীল প্রশাসনিক অফিসারকে যে ভাষায় এবং যে ভঙ্গিতে তিনি হুমকি (অডিয়োটা শুনতে শুনতে মনে হচ্ছিল ‘হুমকি’ও যথেষ্ট নরম শব্দ) দিয়েছেন এবং সটান বলেছেন যে, তাঁর ফোনকলটি যে রেকর্ড হচ্ছে, সে কথা সম্যক জেনেই তিনি ওই কথাগুলো উচ্চারণ করছেন, তা থেকে ঠিকরে ঠিকরে বেরিয়েছে এক বেপরোয়া এবং উন্মার্গগামীর দম্ভ। দৃষ্টান্তমূলক প্রশাসনিক শাস্তির বদলে দলের তরফে শো কজ় করার হুঁশিয়ারি এবং তার পরে কুৎসিত বানানে মেকি ক্ষমাপ্রার্থনার বাণীতে শাস্তির চিঁড়ে ভিজে গেলে তার কুফল সুদূরপ্রসারী হতে বাধ্য।

ঘিনঘিনে ফোনকলের অডিয়োটা শুনতে শুনতে মনে পড়ছিল দিনকয়েক আগের ফোনকলটা। একই লোক। একই কণ্ঠ। একই কেষ্ট। একই বাঁশি। শুধু পর্দা আর ভাষার ফারাক।

সে দিন মনে হয়েছিল, লোকটা বদলেই গিয়েছে বুঝি। এ দিন মনে হল, বাঁশি শুনে আর কাজ নাই। সে যে ডাকাতিয়া বাঁশি!

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন