নতুন ভারতে এখন কাঠের চুলোয় আর রান্না হয় না বললেই চলে। ঘরে ঘরে এখন এলপিজি সিলিন্ডার। বর্তমানে দেশের ৩৩ কোটি পরিবার এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার করে। তবে জানেন কি, এলপিজি বা রান্নার গ্যাসের ক্ষেত্রে ভারত অনেকটাই বিদেশের উপরে নির্ভরশীল? প্রতি তিনটি সিলিন্ডারের মধ্যে দুটি সিলিন্ডারেরই গ্যাস সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, কাতারের মতো মধ্য প্রাচ্যের দেশ থেকে।
ইরান-ইজরায়েলের সংঘাত এবং আমেরিকার হঠাৎ ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে হামলা চালানোর জেরে যুদ্ধের উত্তেজনা বেড়েছে। ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তেলের সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। তবে শুধু তেল নয়, ঘাটতি দেখা দিতে পারে এলপিজি জোগানেও। বাড়িতে সরবরাহ করা রান্নার গ্য়াস অমিল হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ ঘটনা! কালীগঞ্জে তৃণমূলের বিজয়োল্লাস থেকে ছোড়া বোমায় মৃত্যু শিশুর!
আরও চিন্তার বিষয় হল, এলপিজি তাৎক্ষণিকভাবে অন্য দেশ থেকে আনা সহজ নয়। পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ভারতের এলপিজি সংরক্ষণের ক্ষমতা মাত্র ১৫-১৬ দিনের। অর্থাৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে, এলপিজি মজুদ মাত্র ১৫-১৬ দিন স্থায়ী হবে।
ভারতে মোট এলপিজি ট্যাঙ্কেজ প্রায় ১১৮৯.৭ টিএমটি, যা প্রায় ১৫ দিনের চাহিদা পূরণ করতে পারবে। সেই তুলনায় পেট্রোল এবং ডিজেলের পরিস্থিতি ভাল। ভারত এই দুটিই রফতানি করে। প্রয়োজনে রফতানি বন্ধ করে অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করা যেতে পারে। কিন্তু এলপিজির জন্য তা করা কঠিন। আমেরিকা, ইউরোপ, মালয়েশিয়া বা আফ্রিকার মতো দেশ থেকে এলপিজি আনা যেতে পারে, তবে সেখান থেকে আসতে সময় লাগবে।
আরও পড়ুন: কালীগঞ্জ উপনির্বাচনে বড় ব্যবধানে জয় মা-মাটি-মানুষের, দ্বিতীয় বিজেপি
এলপিজির আরেকটি বিকল্প হতে পারে পাইপযুক্ত প্রাকৃতিক গ্যাস (পিএনজি), তবে এটি মাত্র ১.৫ কোটি বাড়িতে পাওয়া যায়। ৩৩ কোটি এলপিজি সংযোগের তুলনায় এটি খুবই কম। আগে মানুষ কেরোসিন ব্যবহার করত, কিন্তু এখন বেশিরভাগ জায়গায় এটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে, যদি এলপিজির ঘাটতি দেখা দেয়, তাহলে শহরগুলিতে একমাত্র বিকল্প থাকবে বিদ্যুৎ দিয়ে খাবার রান্না করা। ভারতে ৭৪ দিনের তেলের মজুদ রয়েছে। রিফাইনারি, পাইপলাইন এবং জাতীয় রিজার্ভে এত তেল আছে, তাতে রিফাইনারিগুলি ৭৪ দিন চলতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে তেলের দাম অল্প সময়ের জন্য বাড়তে পারে, তবে শীঘ্রই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। গত কয়েক বছর ধরে পেট্রোল এবং ডিজেলের দাম পরিবর্তিত হয়নি এবং ভবিষ্যতেও স্থিতিশীল থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে সাধারণ মানুষ যাতে কোনও সমস্যার সম্মুখীন না হয় সেজন্য এলপিজি সরবরাহের দিকে নজর রাখা হচ্ছে।