Tuesday, 5 August, 2025
5 August, 25
HomeকলকাতাHearing Aid: হাসপাতালে PPP মডেল; সরকারের খাচ্ছে, পাবলিকেরও খাচ্ছে

Hearing Aid: হাসপাতালে PPP মডেল; সরকারের খাচ্ছে, পাবলিকেরও খাচ্ছে

পিপিপি মডেলের আড়ালে এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যালে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ। ইএনটি বিভাগে সরকারি পরিকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে পুকুর চুরির অভিযোগ উঠল।

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

নিখরচায় চিকিৎসা পাওয়ার জন্য সরকারি হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল রাজ্যের লাখ লাখ মানুষ। রোগীরা যাতে সুষ্ঠু পরিষেবা পান, তার জন্য পিপিপি মডেল চালু করেছে রাজ্য সরকার। আর সেই পিপিপি মডেলের আড়ালে এনআরএস, কলকাতা মেডিক্যালে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ। ইএনটি বিভাগে সরকারি পরিকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে পুকুর চুরির অভিযোগ উঠল। মুনাফা লাভের লক্ষ্যে রোগীদের জীবনের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগে বিদ্ধ বেসরকারি স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং ক্লিনিক। স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে দুই মেডিক্যাল কলেজ।

বরাহনগর স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং ক্লিনিক পিপিপি মডেলে এন‌আর‌এস ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে অডিও ভেস্টিবুলার ক্লিনিক পরিচালনা করে। কী কাজ তাদের? ইএনটি বিভাগের আউটডোরে প্রতিদিন যে সকল রোগী কানে শোনার সমস্যা নিয়ে দেখাতে আসেন, তাঁদের এই ক্লিনিকে পরীক্ষা করানো হয়। বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা রয়েছে। কানে শোনার সমস্যা আদৌ আছে কি না, তার জন্য প্রথমে যে স্ক্রিনিং করা হয় তার নাম OAE (OTO-ACOUSTIC EMISSIONS)। এই পরীক্ষায় শোনার সমস্যা রয়েছে ইঙ্গিত মিললে নিশ্চিত হতে বিভিন্ন রকমের অডিওলজিক্যাল ডায়াগনস্টিক টেস্ট করা হয়।

পরের ধাপে পরীক্ষার নাম হিয়ারিং এইড ট্রায়াল। অভিযোগ, এন‌আর‌এসে ১১ মাসের শিশুর ভুয়ো হিয়ারিং এইড ট্রায়াল করিয়ে কানে শোনার যন্ত্র কেনানো হয়েছে। কেন ভুয়ো? তার কারণ PB-SPONDEE নামে এই পরীক্ষা সাত বছর বয়সের আগে করা যায় না। সেই জায়গায় সংস্থা ১১ মাসের শিশুর সেই পরীক্ষা করিয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। সেই পরীক্ষার রিপোর্টের ভিত্তিতে শিশুকে বধির প্রমাণ করে কানে শোনার যন্ত্র কেনানো হয়েছে।

আরও পড়ুন: স্মার্ট বিভ্রাট! বিল বেশি আসবে না কম!

কলকাতা মেডিক্যালে নিপ্রা দাস নামে এক রোগীর কানের হাড়ের সমস্যার জন্য শুনতে অসুবিধা হচ্ছিল। তাঁর কানে শোনার সমস্যা রয়েছে বলে জানিয়ে ৬২ হাজার টাকা দিয়ে কানে শোনার যন্ত্র কেনানো হয়েছে। তাতে সমস্যা না মিটলে রোগী এস‌এসকেএমের দ্বারস্থ হন। এস‌এসকেএমের চিকিৎসকেরা কলকাতা মেডিক্যালের ডায়াগনসিস দেখে তাজ্জব হয়ে যান। যে রোগীর কানে শোনার কোন‌ও সমস্যা নেই তাঁকে কানে শোনার যন্ত্র গোছানো হয়েছে।

নেহা দাস নামে এক শিশুকন্যার কানে শোনার সমস্যা নিয়ে এনআরএসের দ্বারস্থ হয়েছিল তার পরিবার। নেহার মা বলেন, “আমার মেয়ের বয়স এখন ২ বছর। ওর দেড় বছর বয়সে কানের সমস্যার কথা জানতে পারি। এনআরএসে দেখানো হয়। পিপিপি ইউনিটে দেখাচ্ছিলাম আমরা। বরাহনগরের একটি সেন্টার থেকে মেশিনটা কিনতে বলে। সেখান থেকেই মেশিনটা কিনি। কোনও স্পিচ থেরাপির কথা বলা হয়নি। মেশিনটার জন্য ৪৮ হাজার টাকা নিয়েছিল। আর পিপিপি মডেলের একজন আলাদা করে ২ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। বলেছিলেন, মোল্ডের জন্য ২ হাজার টাকা লাগবে। পরে আমরা জানতে পারি, প্রথমবার মোল্ডের জন্য কোনও টাকা লাগে না। আমরা অভিযোগ দায়েরও করি।”

ছয় গুরুতর অভিযোগ উঠেছে ওই বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে। এন‌আর‌এসের একটি ঘটনায় হাসপাতালের গণ্ডি ছাড়িয়ে লোক আদালতে অভিযোগ গিয়েছে। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে রোগীদের অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা করিয়ে সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ উঠেছে। রোগীদের একটি নির্দিষ্ট সংস্থার যন্ত্র কিনতে চাপ দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এমনকি, সরকারি অনুদানের যন্ত্র‌ও টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে। সংস্থার অডিওলজিস্টের রেজিস্ট্রেশন ভুয়ো বলে অভিযোগ। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছে স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন।

আরও পড়ুন: চাকরি বাতিল, স্কুলে শিক্ষকই নেই! ছাত্র ভর্তি নেওয়াই বন্ধ করল স্কুল

অভিযোগ নিয়ে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি অঞ্জন অধিকারী বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। আমরা বিষয়টি নিয়ে সচেতন রয়েছি। সরকারের নিয়মের বাইরে গিয়ে কেউ কিছু করতে পারে না। আশা করি, দিন পনেরোর মধ্যে তদন্ত শেষ হবে। তারপর সরকারের কাছে রিপোর্ট জমা দেব।” অভিযোগ নিয়ে এনআরএসের অধ্যক্ষ ইন্দিরা দে কোনও মন্তব্য করতে চাইলেন না। লোক আদালত তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছিল। সূত্রের খবর, অভিযোগ নিয়ে হাসপাতালের লিখিত বক্তব্য জানাতে বলা হয়েছে তাঁকে।

অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে দিন তিনেক আগে ওই বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তখন তারা তিনদিন পর আসতে বলে। এদিন ওই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনও মন্তব্য করতে চায়নি।

অন্যদিকে, অভিযুক্ত সংস্থাকে তোপ দেগে স্পিচ অ্যান্ড হিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অরূপনন্দন দাস অধিকারী প্রশ্ন তোলেন, “দোষ না করলে প্রতিক্রিয়া দিতে ভয় কীসের?” এখন দেখার, তদন্তের পর রিপোর্টে কী জানায় দুটি মেডিক্যাল কলেজ।

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন