শুধু বিহার বিহার আর বিহার, আর কোনও রাজ্য নেই নির্মলা! প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। কারণ ভোট এবং শরিকি অঙ্কের সমন্বয় ঘটাতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের বাজেট যেন আটকে গেল বিহারের সীমানাতেই। বাজেট বক্তৃতা তিনি যেমন দিলেন বিহারের মধুবনী শাড়িতে, তেমনই ভাষণের কেন্দ্রবিন্দুতেও রইল নীতীশ কুমারের রাজ্য।
এমনিতে ১ ঘণ্টা ১৬ মিনিটের ভাষণে আয়করে স্বস্তি ছাড়া বিরাট কোনও জনমুখী ঘোষণা নির্মলা সীতারমণ করেননি। কিন্তু তাঁর বাজেট বক্তৃতায় বারবার উঠে এসেছে বিহারের নাম। নির্মলা যেটুকু বড় ঘোষণা রাজ্য ধরে করেছেন, সেটার বেশিরভাগটাই বিহার কেন্দ্রিক। এদিন বাজেট বক্তৃতার শুরুতেই নির্মলার চমক ছিল বিহারের মধুবনী শাড়ি। ওই শাড়িটি পদ্মশ্রী দুলারি দেবী বিহার সফরের সময় নির্মলাকে উপহার দিয়েছিলেন। সেই মধুবনীর ছোঁয়াতে বিহারের অর্থনীতি বদলানোর চেষ্টা করেছেন অর্থমন্ত্রী।
কী কী উপহার পেল বিহার?
বিহারে তৈরি হবে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফুড টেকনোলজি’।
পাটনা বিমানবন্দর সম্প্রসারণ।
শিল্প ও পরিষেবা পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য চারটি নতুন গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর।
একটি ব্রাউনফিল্ড বিমানবন্দর নির্মাণের কথাও বাজেটে ঘোষণা করেছেন নির্মলা।
পাটনা আইআইটির পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়ানোর জন্যও বরাদ্দ করা হয়েছে।
মাখানা চাষিদের জন্য আলাদা করে মাখানা বোর্ড গঠন।
মিথিলাঞ্চল এলাকায় ৫০ হাজার হেক্টর জমিতে চাষবাসের জন্য কুশি খাল প্রকল্প।
খননে কেন্দ্রীয় সহায়তা।
আরও পড়ুন: Kolkata: পি এস ইউ এর ২৩ তম রাজ্য সন্মেলনের লোগো আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশিত
কিন্তু কেন নির্মলার ফোকাসে শুধু বিহার? উত্তরটা খুব সহজ। এক, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার এখন নীতীশ কুমারের উপর নির্ভরশীল। দুই, এ বছরের শেষের দিকেই বিহারে বিধানসভা ভোট। বিহারে এই মুহূর্তে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএ সরকার চলছে। সে রাজ্যে এবার বিজেপির কঠিন লড়াই। একদিকে তেজস্বী যাদবের জনপ্রিয়তা অন্যদিকে প্রশান্ত কিশোরের নতুন দল। দুই কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। লড়াই অবশ্য আরও একটা আছে। সেটা এনডিএ-র অভ্যন্তরেও। এই মুহূর্তে বিহারে এনডিএ-তে বড় শরিক বিজেপি। অথচ মুখ্যমন্ত্রী পদে নীতীশ কুমার। বিজেপি চাইবে এবার বিধায়কসংখ্যা আরও বাড়িয়ে নীতীশের দলের উপর চাপ বাড়াতে। কারণ বিহারে নীতীশ কুমার বিজেপির উপর যত বেশি নির্ভরশীল হবেন, কেন্দ্রে মোদি সরকারের নীতীশ নির্ভরতা ততই কমবে।