আরও এক মহাযুদ্ধের পথে এগোতে চলেছে বিশ্ব! আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে চলতে থাকা সংঘাত এবার সরাসরি যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। পরমাণু চুক্তি সই না করলে ইরানের উপর বোমা হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর পালটা এবার মিসাইল প্রস্তুত করা শুরু করল ইরান। আমেরিকা যদি কোনওরকম হামলা চালায় তবে পালটা জবাব দিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাটির নিচে ক্ষেপণাস্ত্র মজুত করছে তেহরান। শুধু তাই নয়, পরমাণু চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি আলোচনার প্রস্তাবও খারিজ করে দেওয়া হয়েছে তেহরানের তরফে।
আরও পড়ুন: বোমায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে ইরানকে, সরাসরি হুমকি ট্রাম্পের
চলতি মাসেই নতুন পরমাণু চুক্তিতে রাজি হওয়ার জন্য ইরানকে দু’মাস সময় দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এর মধ্যে পদক্ষেপ না করলে তেহরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আমেরিকা। তবে মার্কিন হুমকির সামনে মাথা নত করতে রাজি হয়নি তেহরান। এই পরিস্থিতিতে রবিবার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুর চড়িয়ে ট্রাম্প জানান, “তারা যদি পরমাণু চুক্তি না মানতে চায়, তবে এমন বোমা হামলা হবে ইরানে, যা এর আগে কেউ প্রত্যক্ষ করেনি।” এরপর সুর খানিক নরম করে বলেন, “আরও একটা সম্ভাবনা আছে। তারা পরমাণু চুক্তিতে স্বাক্ষর না করলে তাদের উপর বিপুল পরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হবে।”
এহেন পরিস্থিতির মাঝেই ইরানের সংবাদমাধ্যমের তরফে জানা যাচ্ছে, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির পরই সমস্ত লঞ্চার প্রস্তুত করে ফেলেছে তেহরান। যে কোনও সময় সেই মিসাইল দাগতে প্রস্তুত ইরান। ইরান সেনা (IRGC)-এর তরফে একটি ৮৫ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, ইরানের ভূগর্ভস্থ অস্ত্রভাণ্ডার। পাশাপাশি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পা দিয়ে অবমাননা করা হচ্ছে ইজরায়েলের পতাকা। পাশাপাশি ইরানের রাষ্ট্রপতি মাসুদ পেজেশকিয়ান স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “আমরা আলোচনা এড়িয়ে যাই না, প্রতিশ্রুতিভঙ্গই এখনও পর্যন্ত আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করেছে।” পাশাপাশি বলেন, “ওদেরকেই (আমেরিকা) ওদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে।”
আরও পড়ুন: কেঁপে উঠল গোটা পাকিস্তান, ভারতের এক সিদ্ধান্তে
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করা হয়েছিল। যার ফলে, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখলে তেহরানের উপর বসানো বিপুল আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে। চুক্তির ফলে শুধুমাত্র পরমাণু বিদ্যুতের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ ইউরেনিয়াম ব্যবহার করতে পারত ইরান, পাশাপাশি ১০ হাজার কোটি ডলারের সম্পত্তি ফিরে পেয়েছিল তাঁরা। তবে এই চুক্তির বিরুদ্ধে ছিলেন ট্রাম্প। ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেই এই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসেন ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে আবার কড়া তেহরান বিরোধী অবস্থান নিয়েছে হোয়াইট হাউস। আমেরিকা চাইছে নতুন করে পরমাণু সমঝোতা করতে। ইরানের অভিযোগ, নিরস্ত্রীকরণের অজুহাত দিয়ে তাদের পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রে ‘কোপ’ মারতে চাইছে আমেরিকা এবং ইজরায়েল।