কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:
দুধের দাঁত পড়ে গিয়ে নতুন দাঁত আর উঠছে না। ফলে ফোকলা নামে ডাকাডাকি চলছেই। অভিমানে শিশুটি এবার দাঁতকেই চিঠি লিখে বসল। এরপর ওই চিঠি নিয়ে হাজির বাবার কাছে। দাবি, পোস্ট অফিসে গিয়ে পোস্ট করে দিতে হবে সেই চিঠি। অসহায় বাবার জানা নেই দাঁতের ঠিকানা। তাই ওই চিঠি ফেসবুকেই পোস্ট করে বসলেন তিনি। এখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের কাছে যাবতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এই চিঠিটি।
ফিল্ম মেকার অভ্রদীপ ঘটকের ছেলে অত্রী ঘটক। বাড়ি জলপাইগুড়ি স্টেশন রোডে। বছর ছয়েকের ওই শিশুর সম্প্রতি দুধের দাঁত পড়ে গিয়েছে। দাঁত না ওঠায় সবাই তাকে ফোকলা বলে ডাকাডাকি করছে। আর তাতেই যারপরনাই বিরক্ত সে। একবছরের মধ্যে ঠাকুরদা ঠাকুমা প্রয়াত হয়েছে। বাড়িতে শুধু বাবা আর মা। তাঁদের বলেও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় এবার দাঁতকে চিঠি লিখে ফেলল সে। লেখার পর বাবাকে বলেছে চিঠি পোস্ট করে দিতে।
আরও পড়ুন: পকেটে টান, হেশেলে আগুন! বাড়ছে রান্নার গ্যাসের দাম
অত্রি বলল, “দাঁত কিছুতেই আসছে না। চিঠি দিলে দাঁত তাড়াতাড়ি চলে আসবে। তাই আমি চিঠি লিখেছি।” কিন্তু কারা তাকে ফোকলা বলেছে, সে প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। আর অত্রির বাবা অভ্রদীপ ঘটকের কথায়, “দাঁতের তো কোনও ঠিকানা হয় না। তাই কী করব! অগত্যা ফেসবুকে পোস্ট করি। ওকে অনেকেই ফোকলা বলে। আমাদের একাধিকবার বলেওছে। আমরা কিছু করতে না পারায় দাঁতকেই চিঠি লিখে ফেলেছে।”
জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার স্বস্তি শ্রবণ চৌধুরী বলেন, “এটা ফ্যান্টাসি থিংকিং এর এক্সটেন্ডেড পার্ট বলা যেতে পারে। যার জন্য ও দাঁতকে চিঠি লিখে ফেলেছে। আসলে এটাই হল শিশুদের কল্পনা জগৎ। এরপর ও যখন ধীরে ধীরে বড় হয়ে যাবে তখন শিখে যাবে কাকে প্রশ্ন করলে উত্তর পাওয়া যাবে। ওদের কল্পনায় অনেক কিছু আসে। সেগুলো আমরা হয়তো কোনওদিন ভাবতেই পারব না।”
আরও পড়ুন: কলার চেপে ধরে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিকে হিঁচড়ে নিয়ে গেল পুলিশ! কারণ অবাক করার মতন
জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ শিবাজী রায় জানান, দুধের দাঁত পড়ে গেলে কিছুদিনের মধ্যে উঠে যাওয়ার কথা। কিন্তু তারজন্য ওই শিশুর চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস থাকতে হবে। তিনি বলেন, “আসলে এখন আমরা সবাই মোবাইলে মগ্ন হয়ে থাকি। তাই শিশুর বিকাশে সঠিক নজর দেই না। লক্ষ্য করিনা বাচ্চা ঠিকভাবে খাচ্ছে কিনা। ফলে এখন দুধের দাঁত উঠতে দেরি হয়।”