গরম নয়, বরং মনোরম আবহাওয়া উত্তরবঙ্গে। এই আবহে স্কুলগুলোতে শুরু হয়েছে গরমের ছুটি। দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া এক নয়। তবুও প্রত্যেকবছর শিক্ষা দপ্তর পাহাড় বাদে গোটা রাজ্যে একইসঙ্গে গরমের ছুটি দিচ্ছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। আর এ নিয়েই ফের প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।আগের সময় মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের জন্য স্কুল ছুটি ছিল বেশ কয়েকদিন। বুধবার থেকে রাজ্যের স্কুলগুলোতে গরমের ছুটি পড়বে। মঙ্গলবার শেষদিনের মতো ক্লাস হয়েছে।
আরও পড়ুন: এর থেকে ভাল খবর আর কী হতে পারে? প্যাচপ্যাচে গরমেও সামান্য স্বস্তি, দাম কমল রান্নার গ্যাসের
অভিভাবকরা প্রশ্ন তোলেন, এত ছুটি থাকলে পড়াশোনায় ক্ষতি হবে না? এমনকি কবে স্কুল খোলা হবে সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনও বার্তা না থাকায় কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বাম প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ ।যদিও এ ব্যাপারে দায় এড়িয়েছেন শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান দিলীপ রায়। তাঁর কথায়, ‘পুরোটাই শিক্ষা দপ্তর থেকে ঠিক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই।এদিকে বাম আমলের প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান সরকারকে বিঁধেছেন এবিটিএ দার্জিলিং জেলা সম্পাদক বিদ্যুৎ রাজগুরু। তিনি জানান, বাম আমলে গরমের ছুটির বিষয়টি স্কুল পরিচালন সমিতির হাতে থাকত। তারা প্রয়োজন অনুযায়ী ছুটি ঠিক করতে পারত। কিন্তু সরকার পরিবর্তন হতেই পাহাড় বাদে বাকি সমস্ত জেলায় একই সময়ে ছুটি রাখা হচ্ছে। বিদ্যুতের বক্তব্য, ‘স্কুলগুলো এখন ছুটির স্কুলে পরিণত হয়েছে। পড়ুয়ারা জিজ্ঞেস করছে, স্কুল কবে খুলবে। কোনও উত্তর দিতে পারছি না।’ তাঁর মতে, আবহাওয়া দেখে তবেই গরমের ছুটি ঠিক করা উচিত। আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উত্তরবঙ্গে সাধারণত জাঁকিয়ে গরম পড়ে জুন মাস থেকে। বিদ্যুতের কটাক্ষ, ‘কিন্তু সেই সময় স্কুল খোলা থাকে। কেন প্রত্যেক বছর দক্ষিণবঙ্গে গরম পড়লে উত্তরবঙ্গেও স্কুল ছুটি দেওয়া হবে? অত্যধিক গরমে পড়ুয়ারা যাতে অসুস্থ না হয়, সেজন্য গরমের ছুটি দেয় সরকার।
কিন্তু উত্তরের বেশিরভাগ জেলায় এখনও সেভাবে গরম পড়েনি। এই সময় স্কুল চালু থাকলে পড়াশোনা অনেকটা এগিয়ে থাকত বলে মনে করছেন সুভাষপল্লির বাসিন্দা অভিভাবক মালিনী সরকার। তাঁর ছেলে শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের ছাত্র। স্কুল বেশিদিন বন্ধ থাকলে বাচ্চারা পড়াশোনা ভুলে যায় বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তরাই তারাপদ আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মা রিয়া পাল।গরমের ছুটি নিয়ে অভিভাবকরা যে খুশি নন, সেই ব্যাপারটা অজানা নয় শিলিগুড়ি নেতাজি বয়েজ প্রাথমিক স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক কাঞ্চন দাসের। তাঁর কথা, ‘আবহাওয়া মনোরম থাকলেও সরকারি নির্দেশিকা মেনে ছুটি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশিকা এলে বোঝা যাবে স্কুল কবে খুলবে।