পুরোদমে ‘যুদ্ধে’ জড়াচ্ছ না ভারত ও পাকিস্তান। কারণ দুই পরমাণু শক্তিধর সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ে গিয়েছে। এমনই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার বিকেলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট ‘ট্রাম্প সোশ্যাল’-এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘রাতভর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচনার পরে আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ভারত এবং পাকিস্তান সম্পূর্ণ এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়ে গিয়েছে। কমন সেন্স (বাস্তবজ্ঞান) এবং বুদ্ধি প্রয়োগ করার জন্য দু’দেশকেই ধন্যবাদ। এই ব্যাপারটায় গুরুত্ব দেওয়ায় ধন্যবাদ।’
এরই মধ্যে পাকিস্তান থেকে ছড়িয়ে পড়ে একটি খবর। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে জেলবন্দি ইরমান খানের নাকি মৃত্যু হয়েছে। শনিবার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা এবং পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের আদিয়ালা কারাগারে মৃত্যুর খবরে সোশ্যাল মিডিয়া সরগরম।
তবে, পাকিস্তানি মিডিয়া দাবি করেছে যে ইমরান খানের হত্যার খবরটি ভুয়ো এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য ভারতের দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। যদিও ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে পাকিস্তানি মিডিয়া দাবি করেছে, ইমরান খান কারাগারের ভেতরে “নিরাপদ এবং সুস্থ” আছেন।
শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দাবি করা হয়, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তাদের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই কারাগারের ভেতরে হত্যা করেছে। দাবি করা হয়, ইমরান খানকে কারাগারের ভেতরে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছে। তবে, পাকিস্তানি মিডিয়া এই খবরটি অস্বীকার করে দাবি করেছে, এটি ভুয়ো। তবে পাকিস্তান বা জেল কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই ভুয়ো খবরের বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি ঘুরছে, যেখানে দাবি করা হচ্ছে, এটি পাকিস্তান সরকার জারি করেছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “গভীর দুঃখের সঙ্গে আমরা নিশ্চিত করছি, বিচার বিভাগীয় হেফাজতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি এমন পরিস্থিতিতে ঘটেছে, যেখানে বর্তমানে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চলছে।”
আরও পড়ুন: পাক গোলায় প্রাণ গেল রাজৌরির পদস্থ আধিকারিকের, আহত আরও ২
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, “আমরা এই মর্মান্তিক ঘটনার কারণ এবং জবাবদিহি করে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পাকিস্তান সর্বদা জীবনের পবিত্রতা এবং আইনের শাসনকে বজায় রেখেছে। মানবাধিকারের সুরক্ষা, বিশেষ করে হেফাজতে থাকা পরিস্থিতিতে, আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোর একটি ভিত্তি।”
পাকিস্তান অবজারভার তার প্রতিবেদনে বলেছে, নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে যে এই প্রতিবেদনগুলি মিথ্যা। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বেঁচে আছেন এবং আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ইমরান খান সক্রিয়ভাবে আইনি পথ অনুসরণ করেছেন, তার আইনি দলের মাধ্যমে জামিনের আবেদন দাখিল করেছেন।”
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন পোস্টও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে তার বাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে অথবা তাকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিওগুলি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে দেখা যায়, খান রক্তাক্ত অবস্থায় আছেন এবং রক্ষীরা তাকে বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন। এই দাবিগুলির কোনওটিই সত্য নয়।
যে ভিডিওটি শেয়ার করা হয়, সেটি অবশ্য সাম্প্রতিক নয়। এটি ২০১৩ সালের, যখন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের তৎকালীন চেয়ারপার্সন খান লাহোরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে মঞ্চে ওঠার সময় ফর্কলিফ্ট থেকে পড়ে যান।
২০১৩ সালে লাহোরে একটি নির্বাচনী সমাবেশে মঞ্চে ওঠার সময় ফর্কলিফ্ট থেকে পড়ে ইমরান খানের মাথায় আঘাত লাগে। মঞ্চে পৌঁছানোর ঠিক আগে প্ল্যাটফর্মটি ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে তিনি তার নিরাপত্তা কর্মীদের সঙ্গে প্রায় ১৫ ফুট নীচে পড়ে যান।