ওড়িশা উপকূলের কাছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপটি শক্তি বাড়িয়ে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় এটি গভীর নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। বর্তমানে উত্তর দিকে ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছে এবং কিছুটা দক্ষিণ দিকে ঝুঁকে রয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তর ও মধ্য বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকবে। ৩১ মে শনিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সমুদ্রের উপর হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ৫৫ থেকে ৬৫ কিমি পর্যন্ত হতে পারে। এর জেরে আগামী কয়েকদিন রাজ্যের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর।
আরও পড়ুন: ‘আরামবাগকে বাদ দিয়ে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নয়’, শুরু আন্দোলন
দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বুধবার সারাদিন। বাকি জেলাগুলিতেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে। বৃহস্পতিবার থেকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, বাঁকুড়া ও পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম এবং হুগলি জেলাগুলিতে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। কলকাতা ও বাকি জেলাগুলিতে ৭০-১১০ মিলিমিটার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।
টানা ভারী বৃষ্টির ফলে উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়বে। উত্তর দিনাজপুর ও কোচবিহারের কিছু অংশে ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও মালদহে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। শুক্রবার ও শনিবার এই প্রবল বৃষ্টির পরিমাণ আরও বাড়বে। রবিবারও একইভাবে উত্তরবঙ্গের ওপরের পাঁচ জেলায় বিক্ষিপ্তভাবে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
কলকাতায় আজ মূলত মেঘলা আকাশ থাকবে। কিছু সময় আংশিকভাবে আকাশ পরিষ্কার হলেও জলীয় বাষ্পের কারণে অস্বস্তি বজায় থাকবে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কলকাতায় ভারী বৃষ্টি হতে পারে। সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। আজ শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৪ ডিগ্রি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৭৯ থেকে ৯৮ শতাংশ।
আগামী দু’দিনের মধ্যে বর্ষা প্রবেশ করবে উত্তরবঙ্গে। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু অসম ও মেঘালয়ের কিছু অংশে প্রবেশ করেছে। আগামী তিনদিনের মধ্যে সিকিম ও উত্তরবঙ্গের কিছু অংশে ঢুকবে বর্ষা। সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতে বর্ষা প্রবেশ করবে খুব শীঘ্রই।
কর্নাটক, কেরল, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ু, উত্তরাখণ্ড ও গুজরাতের কিছু অংশেও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে বুধবার। পশ্চিম রাজস্থানে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে।
আগামী কয়েকদিনে রাজ্যে বৃষ্টির মাত্রা বাড়ায় তাপমাত্রা সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। তবে, খুব বেশি তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা নেই।