জালিয়াতি হচ্ছে তৎকাল টিকিটে? ট্রেনে তৎকালে টিকিট কাটতে গেলে কিছুতেই সেই টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। কখনও নেটওয়ার্ক সমস্যা, কখনও সার্ভার ডাউন! যেই মুহূর্তে বুকিং করতে যাচ্ছেন, সঙ্গে সঙ্গে দেখাচ্ছে, সব টিকিট সোল্ড আউট। একজন-দু’জন নয়। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৭ জনই এই সমস্য়ার মুখে পড়ছেন। আর তারপরই প্রশ্ন তুলেছেন গ্রাহকরা যে তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে কি কোনও কারসাজি করা হচ্ছে?
শেষ মুহূর্তে ভ্রমণের প্ল্যানিং হলে ট্রেনে টিকিট পাওয়ার ক্ষেত্রে ভরসা একমাত্র এই তৎকাল টিকিটই। তবে তৎকালে টিকিট কাটা এত ঝক্কির হয়ে গিয়েছে যে কেউ রেলের সিস্টেমের উপরে ভরসাই করতে পারছেন না।
আরও পড়ুন: তাসের ঘরের মতো ভাঙল সেনাঘাঁটি! নিহত ৩, নিখোঁজ ৬
নির্দিষ্ট সময়ে অর্থাৎ এসি বুকিংয়ের জন্য যাত্রার আগের দিন সকাল ১০ টায় এবং নন-এসি বুকিংয়ের ক্ষেত্রে সকাল ১১টায় ভারতীয় রেলওয়ের তৎকাল টিকিট বুকিং পোর্টাল খোলে। যাত্রীদের অভিযোগ, ওই সময়ে পোর্টালে ঢুকলেই সার্ভার ডাউন হয়ে যাচ্ছে। কেউ টিকিট বুকিংয়ের সব ধাপ পেরিয়ে গেলেও, শেষ মুহূর্তে গিয়ে তা আর বুক হচ্ছে না। এক-দেড় মিনিটের জন্য সার্ভার আটকে যাচ্ছে। তারপরই যখন আবার সব ঠিক হচ্ছে, ততক্ষণে সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
লোকাল সার্কেল নামক একটি সংস্থা দেশজুড়ে সমীক্ষা চালিয়েছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে ৫৫ হাজার যাত্রীর উপরে এই সমীক্ষা করা হয়। তাদের সমীক্ষা অনুযায়ী, তৎকাল টিকিট বুকিংয়ে সবথেকে বেশি বিরক্ত যাত্রীরা। বুকিং শুরু হওয়ার এক মিনিটের মধ্যে সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বিগত এক বছর ধরেই যাত্রীদের এই সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: RBI-র বড় নির্দেশ! ব্যান হতে চলেছে ৫০০ টাকার নোটও
অনেক যাত্রীর অভিযোগ, যতবারই চেষ্টা করা হোক না কেন, টিকিটের টাকা কেটে নিলেও তা সবসময় ওয়েট লিস্ট হয়ে থাকছে। কেউই কনফার্ম টিকিট পাচ্ছে না। ১০ জনের মধ্যে ৩ জনই জানিয়েছেন, তৎকাল বুকিংয়ের ক্ষেত্রে এজেন্ট ছাড়া অচল। তাদের হাতেই একমাত্র কনফার্ম টিকিট পাওয়া যায়। অনেকে আবার সরাসরি রেল স্টেশনে গিয়েই বুকিং করছেন।
গত বছরে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষ তৎকাল বুকিংয়ের চেষ্টা করেছেন, তার মধ্যে ২৯ শতাংশই জানিয়েছেন তারা কখনও টিকিট পাননি।
প্রসঙ্গত, এর আগেও তৎকাল বুকিং নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছিল। ২০২৫-১৬ সালে রেল মন্ত্রকের তদন্তেই উঠে এসেছিল যে কিছু রেলের কর্মীদের সঙ্গে এজেন্টরা হাত মিলিয়ে নকল টিকিট বুকিং চক্র চালাচ্ছিল। তারা ভুয়ো নামে তৎকাল টিকিট বুকিং করে রাখত। পরে গ্রাহকরা বুকিং করলে, তাদের নামে সেই টিকিটের নাম পরিবর্তন করে দিত।