এক নাবালককে খুনের অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত নদিয়ার তেহট্টের নিশ্চিন্তপুর। বেধড়ক মারধরে প্রাণ গেল আরও ২ জনের। শনিবার সকালে পুকুর থেকে ওই নাবালকের ত্রিপলে মোড়া দেহ উদ্ধারের পরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলে চড়াও হন স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। সেইসময়ই বেধড়ক মারধরে অভিযুক্ত প্রতিবেশী এবং আরও একজনের মৃত্যু হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল বিকেলে খেলতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি তৃতীয় শ্রেণির স্বর্ণাভ বিশ্বাস। বাড়ির লোক চারদিকে খোঁজ করেন। কিন্তু, কোথাও পাওয়া যায়নি। এদিন সকালে বাড়ির কাছেই পুকুরে ওই নাবালকের ত্রিপলে মোড়া দেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্বর্ণাভকে খুন করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
প্রতিবেশী উত্তম মণ্ডলের বিরুদ্ধে স্বর্ণাভকে খুন করে পুকুরে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপরই ওই প্রতিবেশীর বাড়িতে চড়াও হন স্থানীয় বাসিন্দারা। উত্তম এবং আরও একজনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পৌঁছয় দমকল ও পুলিশ। মারধরে গুরুতর জখম অবস্থায় ২ জনকে তেহট্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুনঃ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা! জলঢাকায় তলিয়ে গেল SSB জওয়ান
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, স্বর্ণাভের মাথায় কাটার দাগ রয়েছে। নাক ও চোখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। উত্তম মণ্ডলের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ, এর আগে অভিযুক্ত ব্যক্তি কয়েকজন স্কুলছাত্রকে পাচারের চেষ্টা করেছিলেন। তাদের নিয়ে পলাশী চলে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে ধরা পড়েন। এবার স্বর্ণাভকে পাচারের ছক ছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই নাবালকের দেহ উদ্ধারের পরই উন্মত্ত জনতা অভিযুক্তদের উপর চড়াও হন। তাতেই ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা এভাবে আইন হাতে তুলে নেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে। কয়েকদিন আগেই নৃশংসভাবে পিটিয়ে খুনের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামনে এসেছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের তালদিতে। চোর সন্দেহে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, গণপিটুনির পর যুবককে দড়ি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরই মৃত্যু হয় যুবকের।