সৌমেন দত্ত, কোচবিহার:
১০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট-সহ STF-এর হাতে গ্রেফতার সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের গীতালদহ অঞ্চলের তৃণমূলের চেয়ারম্যান মাফুজার রহমান। গ্রেফতার করা হয়েছে আরও ৪ জনকে। প্রভাবশালী এই তৃণমূল নেতার স্ত্রী গীতালদহ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। মাফুজার গ্রেফতার হতেই তৃণমূলের বিধায়ক, সাংসদ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গে ওই নেতার ছবি দেখিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি। পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি দুই নেতাকে দল থেকে বহিস্কার করল তৃণমূল।
গোপন সূত্রের খবর পেয়ে গতকাল রাজ্য পুলিশের এসটিএফ অভিযান চালায় কোচবিহার শহরে। অভিযানে STF-এর হাতে ইয়াবা সহ গ্রেফতার হয় তৃণমূলের দুই নেতা সহ ৫ জন। কোচবিহার গুঞ্জুবাড়ি এলাকা থেকে ওই ৫ ব্যক্তিকে প্রথমে আটক করে তল্লাশি চালালে তাঁদের কাছ থেকে প্রায় দশ হাজার নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় কুড়ি লক্ষ টাকা।
আরও পড়ুন: ক’দিন আগেই পহেলগামে পৌঁছেছিল ৫-৬ জন পাকিস্তানি জঙ্গি, ঘটনাস্থল রেইকি করেছিল একাধিকবার
যে পাঁচ জন ব্যক্তিকে এসটিএফ গ্রেফতার করে তার মধ্যে একজন গীতালদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান তথা বর্তমানে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান বিজলি খাতুন বিবির স্বামী মাফুজার রহমান। অপরজন ওই একই গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চায়েত সদস্য সেরাজুল মিয়া।
তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্য এবং তাদের অঞ্চল চেয়ারম্যান নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট সহ ধরা পড়ার পর এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি। ধৃতদের সঙ্গে শাসকদলের বিধায়ক, সাংসদদের ছবি তুলে ধরে তারা। তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতৃত্ব। ছবিতে দেখা যাচ্ছে মাফুজার রহমানের সঙ্গে সিতাই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক সংগীতা রায়, কোচবিহারের তৃণমূল সংসদ জগদীশ বসুনিয়া ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহকে। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বোস বলেন, “ঠিকমতো তদন্ত হলে এর সঙ্গে জড়িত আরও অনেকের নাম সামনে আসবে। কারণ, এর ভাগ সকলেই পায়।”
আরও পড়ুন: ব্যবসায় বাজিমাত এই চার রাশির
অস্বস্তি এড়াতে এরপরই জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে মাহফুজুর রহমান এবং সেরাজুলকে ছয় বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করার কথা ঘোষণা করেন কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। ২ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, দলবিরোধী কার্যকলাপ ও সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য তাঁদের বহিষ্কার করা হয়। পরে আদালতে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাঁদের দলে ফেরার সুযোগ রয়েছে। না হলে এমন লোকদের তৃণমূলে জায়গা নেই। এদিকে, এদিন ধৃতদের NDPS আদালতে তোলা হয়। আদালত ৬ দিনের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে ধৃতদের।