কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:
টানা বর্ষণে কার্যত বিপর্যস্ত উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। অসম, অরুণাচল প্রদেশ, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম ও সিকিম—এই রাজ্যগুলিতে গত ৪৮ ঘণ্টায় মেঘভাঙা বৃষ্টি, ধস এবং হড়পা বানে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩০ জন। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমে। স্থানীয় প্রশাসন আশঙ্কা করছে, আরও মৃত্যুর খবর আসতে পারে।
আরও পড়ুন: মিষ্টান্নের থালায় আম, জাম, কাঁঠাল! পুরনো ও নতুনের মিশেলে জমজমাট জামাইষষ্ঠী
অসম ও মেঘালয়কে যুক্তকারী জাতীয় সড়ক ১৭-এর একাংশ ধসে গিয়ে তুরা ও গুয়াহাটির মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ধসের কারণে বহু এলাকায় আটকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ ও পর্যটকেরা। শনিবার অরুণাচলের পূর্ব কামেঙ জেলায় ধস নামলে একটি চলন্ত গাড়ি গভীর খাদে পড়ে যায়। ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে দুই পরিবারের সাত জনের।
একই দিনে রাজ্যের জিলো জেলার ক্যাবেজ গার্ডেন ও পাইন গ্রোভ এলাকায় ধসে মারা গিয়েছেন আরও দু’জন। অরুণাচলের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মামা নাটুং সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকপ্রকাশ করেছেন। সিকিমের উত্তরাংশে লাচুং ও লাচেনের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার রাত থেকে টানা মেঘভাঙা বৃষ্টিতে তিস্তার জল বিপজ্জনক হারে বেড়ে গিয়েছে।
প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনও পর্যটককে উত্তর সিকিমে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সূত্রের খবর, দেড় হাজারের বেশি পর্যটক বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছেন। উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে রাজ্য পুলিশ ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF)। অসমের অন্তত ১২টি জেলায় জল ঢুকে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে কিছু এলাকায়। প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। শনিবারই রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৪ জনের।
আরও পড়ুন: বৃষ্টিস্নাত কলকাতায় পা শাহের! রবিবার একগুচ্ছ কর্মসূচি
ব্রহ্মপুত্রের জলস্তর হু-হু করে বাড়ছে। স্থানীয়দের দাবি, এই বৃষ্টি চলতে থাকলে নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইবে। শুধু গুয়াহাটিতেই শনিবার ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে—গত ৬৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ এক দিনের বর্ষণ। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিন উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অংশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি চলবে। অসমে জারি হয়েছে কমলা সতর্কতা। বাকি রাজ্যগুলিতে হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।