Tuesday, 17 June, 2025
17 June, 2025
Homeউত্তরবঙ্গNorth Bengal Food: সুখাদ্যের বেশে কুখাদ্যের রমরমা! রেস্তোরাঁয় খাচ্ছি বটে, কিন্তু জানছি...

North Bengal Food: সুখাদ্যের বেশে কুখাদ্যের রমরমা! রেস্তোরাঁয় খাচ্ছি বটে, কিন্তু জানছি কি!

হাওয়া থেকে হামি, হোঁচট থেকে খাবি, বাঙালির খাওয়ার বস্তু বিবিধ। কিন্তু হোটেল-রেস্তোরাঁর ঝাল-ঝোলের সুখাদ্যে কী পাচ্ছেন, তার গুণমান কতটা, স্বাস্থ্যকর কি না, এ সব নিয়ে তথ্যতালাশ কে আর করেন!

অনেক কম খরচে ভিডিও এডিটিং, ফটো এডিটিং, ব্যানার ডিজাইনিং, ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এবং মার্কেটিং এর সমস্ত রকম সার্ভিস পান আমাদের থেকে। আমাদের (বঙ্গবার্তার) উদ্যোগ - BB Tech Support. যোগাযোগ - +91 9836137343.

কুশল দাশগুপ্ত, শিলিগুড়ি:

 রাহুল নাথ, কোচবিহার:

 সৌমেন দত্ত, কোচবিহার:

স্ট্রিট ফুড বলে অনেক স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ নাক সিঁটকোন। তাঁরা পছন্দ করেন হোটেল, রেস্তোরাঁয় খাওয়াদাওয়া করতে। কিন্তু উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন শহরে যে খাবারদাবার বিক্রি হয়, সেটা গুণমান সম্পর্কে অনেক ক্রেতারই কোনও ধারণা নেই। জনস্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে যে সরকারি ব্যবস্থা আছে, অনেক জায়গায় তা ঠিক ভাবে কাজ করে না। ফলে সুখাদ্যের বেশে কুখাদ্যের রমরমা বাড়ছে।

শিলিগুড়ি

শিলিগুড়িতে ফুড সেফটি অফিসাররা বিভিন্ন জায়গায় হানা দিচ্ছেন খাবারের মান খতিয়ে দেখতে। কিন্তু গোড়াতেই গদল রয়ে গিয়েছে। পুরসভার ওই টিম কোনও খাবারের দোকানের বিরুদ্ধে মামলাই করতে পারবে না। খাবারের গুণমান যাচাই করার জন্য প্রয়োজনীয় ল্যাবরেটরিই চালু করা যায়নি শিলিগুড়িতে।

ফলে সন্দেহবশত ফুড সেফটি টিমের কর্মীরা কোনও দোকানের খাবারের নমুনা সংগ্রহ করলেও, পরীক্ষার জন্য পাঠাতে হবে কলকাতায়। কে না জানে, সংগ্রহ করা নমুনা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা না-হলে সঠিক ফল মিলবে না। কেন শিলিগুড়ির শালবাড়ি এলাকায় তৈরি ল্যাবরেটরি চালু করা যাচ্ছে না, তার কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা নেই পুরসভার কাছেও।

সরকারি নিয়ম হলো, এই ধরনের ল্যাবরেটরি চালু করতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল অ্যাক্রিডিটেশন বোর্ড ফর টেস্টিং অ্যান্ড ক্যালিব্রেশন (এনএবিএল)-এর কাছ থেকে শংসাপত্র নিতে হয়। শিলিগুড়ি পুরসভার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অনুমতি চাওয়া হলেও এখনও কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত ওই সংস্থার কর্মীরা ল্যাবেরেরটরির শংসাপত্র দেওয়ার কাজ সেরে উঠতে পারেননি। ফলে সন্দেহ হলেও কোনও খাবার পরীক্ষা করে দেখার সাহস নেই ফুড সেফটি টিমের কর্মীদের। পরীক্ষা করতে গেলে সেই তো কলকাতায় পাঠাতে হবে।

শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবও কেন্দ্রীয় সরকারের ঢিলেমিতে বিরক্ত। তাঁর দাবি, পুরসভা চাইলে এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে পারছে না। বলেন, ‘ল্যাবরেটরি রয়েছে। অথচ এনএবিএল থেকে শংসাপত্র মেলেনি বলে সেটা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। কবে অনুমতি মিলবে, সেটাও জানি না। সেই কারণে আমরা অভিযানের সময়ে ধরপাকড়ের চেয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উপরে জোর দিয়েছি।’

আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে কংগ্রেসের সংগঠন কার্যত অভিভাবকহীন! শাসকদলে যোগ দিচ্ছেন প্রাক্তন বিধায়ক শংকর মালাকার

জলপাইগুড়ি

গত কয়েক মাস ধরে জলপাইগুড়ি শহর-সহ জেলা জুড়ে অভিযান চালাচ্ছে ফুড সেফটি বিভাগ। উৎসব-অনুষ্ঠানের দিনগুলিতে একটু বেশি তৎপরতা দেখা যায়। এ বার জামাইষষ্ঠীর আগে হোটেল রেস্তোরাঁয় অভিযান চালানো হয়। নামীদামি হোটেল রেস্তোরাঁ ছাড়াও জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দাদের একটা বড় অংশকে রাস্তার পাশের খাবারের গাড়িতে ভিড় জমাতে দেখা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, দৈনিক ওই খাবারের দোকানগুলিতে যে খাবার বিক্রি করা হচ্ছে, তা স্বাস্থ্যসম্মত কিনা।

জলপাইগুড়ি সদর মহকুমা প্রশাসন একাধিকবার অভিযান চালাতে দেখা গেছে। সম্প্রতি স্কুলগুলির সামনে থাকা খাবারের দোকান এবং গাড়ির খাবারের মান খতিয়ে দেখা হয়। ফণীন্দ্রদেব উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে সাথে একাটি ফাস্ট ফুডের দোকানের খাবারের গুণগত মান নিয়ে সন্দেহ থাকায় সেটি অস্থায়ী ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। খাবারের নমুনা পরীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত মাসে আচমকাই ফুড সেফটি বিভাগ এবং ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তর অভিযান চালিয়েছিল একাধিক কনফেকশনারি এবং বিরিয়ানির দোকানে। সেখান থেকে খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ফুড সেফটি বিভাগের আধিকারিক রাজেন্দ্রকুমার রাই বলেন, ‘প্রতি মাসে বিভিন্ন এলাকা চিহ্নিত করে অভিযান চালানো হয়। এটা বিভাগের রুটিন অভিযান। শুক্রবারও অভিযান চালানো হয়েছে।’

আরও পড়ুন: শাস্ত্রমতে গঙ্গা দশহরার দিন গঙ্গাস্নান করলে দশবিধ পাপ ক্ষয় হয়, স্নানের শুভ সময় কখন?

কোচবিহার

স্ট্রিট ফুড থেকে ছোটখাটো রেস্তোরাঁ, বেশিরভাগ দোকানেই খাবারের গুণমান সন্তোষজনক নয়। কোথাও খাবারের স্বাদ বাড়াতে মেশানো হচ্ছে আজিনামোটো। কোথাও সন্ধের খাবার বিক্রি না হলে রেখে দেওয়া হচ্ছে ফ্রিজে। পরের দিনে সেটাই চলে আসছে ক্রেতার প্লেটে। বছরের পর বছর এমনটা চললেও পুরসভা ও স্বাস্থ্য দপ্তরের নজরদারি অভাবেই অস্বাস্থ্যকর খাবার বিক্রি হচ্ছে রমরমিয়ে।

মাঝেমধ্যেই অবশ্য খাবারের মান, দোকানের পরিচ্ছন্নতা ঠিক রয়েছে কি না, ফুড লাইসেন্স আছে কি না, এ সব দেখতে অভিযান চালানো হয়। তবে এ নজরদারি নিয়মিত নয়। কিন্তু এতে যে কাজ কিছুই হয় না, তার প্রমাণ মিলেছে বারে, বারে। মাসখানেক আগে পুলিশের এনফোর্সমেন্ট বিভাগ ও স্বাস্থ্য দপ্তরের খাদ্য সুরক্ষা বিভাগ যৌথ অভিযান করেছিল। সেই সময় দেখা যায়, বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর ফুড লাইসেন্স-ই নেই।

অনেকের লাইসেন্সের মেয়াদ পেরিয়ে গিয়েছে এক বছর আগে। হোটেলের ফ্রিজ়ের ভিতরে পাওয়া গিয়েছে বাসি মাছ-মাংস-সহ তরকারি। এ সব শুধু সতর্ক করেই ছেড়ে দেওয়া হয়। তেমন কোনও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। কোচবিহার পুরসভার সেনেটারি ইনস্পেক্টর সৌরভ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, তাঁরা মাসে অন্তত দু’বার অভিযান চালান। কিন্তু, শহরবাসীর প্রশ্ন, এই উদ্যোগ কি জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য যথেষ্ট?

আরও পড়ুন: শাস্ত্রমতে গঙ্গা দশহরার দিন গঙ্গাস্নান করলে দশবিধ পাপ ক্ষয় হয়, স্নানের শুভ সময় কখন?

আলিপুরদুয়ার

জেলা শহরের হোটেল, রেস্তোরাঁ ও খাবারের দোকানে নিয়মিত অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন। দু’সপ্তাহ আগেই মাধব মোড় এলাকার একটি কেকের দোকানে মেয়াদ উত্তীর্ণ কেক বিক্রির খবর জানার পরে সেখানে মহকুমা প্রশাসন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তর ও পুর আধিকারিকদের নিয়ে অভিযান চালায়।

মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়া কেকের নমুনা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছে পাঠানো হয়। নিয়মিত দেখা হয়, কাঁচা মাংস ও মাছ সঠিক ভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে কি না। রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতা, পানীয় জলের মান পরীক্ষা করা হয়। অতীতে কয়েকটি হোটেল ও রেস্তোরাঁর খাবারের মান ভালো না হওয়ায় সেগুলির কর্ণধারের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হয়েছে।

কিন্তু স্ট্রিট ফুডের নামে যে ব্যবসা, সেক্ষেত্রে নজরদারি কোথায়? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেস্তোরাঁ মালিক বলেন ‘যত খাঁড়া আমদের উপরেই নেমে আসে। কী ধরনের ভোজ্য তেল ও মশলা ব্যবহার করা হচ্ছে, তার নমুনাও যাচাই করা হয়। অথচ স্ট্রিট ফুডের দোকানগুলি রমরমিয়ে চলছে। সেদিকে নজর নেই প্রশাসনের।’

এই মুহূর্তে

আরও পড়ুন