ইরানের দিকে হাত বাড়াবেন না, পরমাণু যুদ্ধ বেধে যেতে পারে। আমেরিকাকে প্রচ্ছন্নভাবে এভাবে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখল রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠরা ইরান-ইজরায়েল সংঘর্ষে আমেরিকাকে নিরস্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, ইজরায়েলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইরানের বুকে যেন আঘাত না করে আমেরিকা। এতে পরমাণু যুদ্ধের বিপর্যয় ঘটে যেতে পারে। প্রসঙ্গত, ইরানের অধিকাংশ পরমাণু কেন্দ্রে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও নির্মাণগত কৌশল সাহায্য করে থাকে রাশিয়া। গত জানুয়ারি মাসেই এ সংক্রান্ত একটি কৌশলগত চুক্তি হয়েছিল দুদেশের মধ্যে। সেই দিক থেকে রাশিয়া খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধুদেশ তেহরান সরকারের।
আরও পড়ুন: বদলে গিয়েছে দেশের ছবিটা! পূর্ণ হল ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’র ১১ বছর
ভ্লাদিমির পুতিন অবশ্য দাবি করেছেন, আমেরিকা কথা দিয়েছে তারা রাশিয়ার প্রযুক্তিতে চলা ইরানি পারমাণবিক কেন্দ্রগুলিতে কোনও বোমা বর্ষণ করবে না। কারণ, সেই কেন্দ্রগুলিতে অনেক রুশ পরমাণু বিজ্ঞানী ও কারিগরি কৌশলী কাজ করেন। সেই দিক থেকে রাশিয়ার উদ্বেগের যথেষ্ট কারণ রয়েছে। রুশ উপ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকোভ বলেছেন, রাশিয়া আমেরিকাকে জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা যেন এই সংঘর্ষের মধ্য না জড়ায়। এবং ইরানে প্রত্যক্ষভাবে হামলা না করে। এতে এই পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের গোটা পরিস্থিতি বিগড়ে যেতে পারে। মার্কিন মদতপুষ্ট ইজরায়েলি হানা বিশ্বে পরমাণু বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এর মধ্যে ইজরায়েল-ইরানের মধ্যে যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতা করার বার্তাও দিয়েছেন। তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, মস্কো দুদেশের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার বিষয়ে পদক্ষেপে প্রস্তুত। যাতে ইরানও শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি চালাতে পারে এবং ইজরায়েলেরও নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়। উল্লেখ্য, ইরানের মতোই ইজরায়েলের সঙ্গেও ক্রেমলিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। যদিও ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে সেই মধুর সম্পর্কে অনেকটাই মরচে পড়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলায় কি বামই ভরসা? অথচ ‘চাকরি খাওয়া’র অভিযোগ এনেছিলেন মমতা
আন্তর্জাতিক সংবাদ প্রতিনিধিদের সামনে পুতিন বলেন, এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। যদিও আমার মনে হয়, সমাধানেরও পথ খোলা আছে। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, ইজরায়েল যদি ইরানের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে খুন করে, তাহলে রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া কী হবে। এর কোনও জবাব না দিয়ে পুতিন জানান, আমি এ ধরনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনাতেই রাজি নই। তিনি জানান, রাশিয়ার প্রস্তাব ইরান, ইজরায়েল ও আমেরিকার কাছে পাঠানো হয়েছে। আমরা কারও উপর কিছু চাপিয়ে দিতে রাজি নই। তবে সহজে বলতে চাই আমরা সমাধানের পথ দেখতে পাচ্ছি। যদিও সবকিছু নির্ভর করছে ওই দেশগুলি বিশেষত ইরান ও ইজরায়েলের উপর।
এদিকে, পুতিন ঘনিষ্ঠ উপ বিদেশমন্ত্রী রিয়াবকোভ জানিয়ে দিয়েছেন, যদি ট্রাম্প তেহরানের পরমাণু কেন্দ্রে বোমাবর্ষণ করেন, তাহলে রাশিয়াও চুপ করে হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। ইরান-ইজরায়েল যুদ্ধে রাশিয়াও যোগ দেবে। তাঁর কথায়- চুপ করে দেখতে থাকব! ইরানের বিরুদ্ধে ইজরায়েলকে কোনও প্রকার সামরিক সাহায্য দেওয়া কিংবা দেওয়ার চিন্তাভাবনাও যেন না করে আমেরিকা। তিনি বলেন, আমেরিকার এই ঝামেলা থেকে নিজেকে দূরে রাখাই উচিত।